কোথায় কাটা হচ্ছে এত গাছ ? মাস্টার মশাই আপনি কিচ্ছু জানেন না !
এমনিতেই বৃষ্টির আকাল শিল্পাঞ্চলে। বিভিন্ন জায়গার তুলনায় আসানসোল শিল্পাঞ্চলে এ বার বৃষ্টির সেভাবে দেখা নেই। অপর দিকে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে চলছে বনসৃজন। বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগানোর কাজ করছে বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
ঠিক সেই সময় শুক্রবার সকালে ধরা পড়ল এক অদ্ভুত ছবি। আসানসোলের বারাবনি থানার অন্তর্গত সোর্সেতলী বিট অফিসের উল্টোদিকে কেটে নেওয়া হয়েছে কয়েকশ গাছ। বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে এই কাজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। একেবারে বিট অফিসের উল্টোদিকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে প্রচুর পরিমানে গাছ কেটে নেওয়া হলেও বিট অফিসে থাকা কর্মীরা কেউ নাকি কিছু জানতে পারেন নি বলে খবর।
প্রসঙ্গত, এলাকার সৌন্দর্য এতটাই, এতটাই শান্ত জায়গা যেখানে কুরুল চালালে আওয়াজ পৌঁছায় অনেকদূর। সেখানে মেশিন দিয়ে প্রায় শ খানেক গাছ কাটা হলেও নাকি কেউ খোঁজ পান নি।
দেখুন…কোথায় কাটা হচ্ছে এত গাছ অথচ আধিকারিক রা কিছু ই জানেন না !!
তবে শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বন দপ্তরের আধিকারিক অর্থাৎ DFO। রীতিমত অনুনয় বিনয়ের পর তার বক্তব্য পাওয়া যায়। তাতে তিনি বলেন ..আপনারা যা দেখছেন আমি ও তাই দেখছি। বারাবনি থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। তবে জমি টা বিট অফিসের অর্থাৎ সরকারের কিনা সেটা আগে সার্ভে করতে হবে বলে বোঝাতে চান তিনি।
অপর দিকে ডেপুটি রেঞ্জারের কথাতেও সেই একই ছোঁয়া। জমিটা বিট অফিস ক্যাম্পাস নয়। জমিটা কার সেটা জানতে হবে।
সভাবত ই …গাছ কে কাটল ? কারা করতে পারে এই ঘটনা ? ঘটনার পিছনে কারণ কি ? একেবারে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ঘটে যাওয়া ঘটনা কেন সরকারি কোয়ার্টারে থাকা কেউ জানল না ! এ সবের থেকেও বড় হয়ে উঠেছে জমি কার আর সেটা বিট অফিস ক্যাম্পাস কিনা সেটাই। আমিন ও নিয়ে এসে জমির খোঁজ খবর নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পড়ুন…গাছ ছেড়ে জমির সন্ধানে কেন ?
ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুর ছড়িয়েছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা বাপ্পা চ্যাটার্জি জানান…কি ভাবে সম্ভব হল এমন কাজ ? কি ভাবে কেটে নেওয়া হলে এত গাছ। যেখানে বৃক্ষ রোপন হচ্ছে, বন মহোৎসব চলছে সেখানে পরিবেশ নষ্ট করার কাজ কারা করল ? সরকারি আধিকারিক কি করছিলেন ?
তবে তৃণমূল নেতা কেশব রাউৎ বলেন..ঘটনার খবর তিনি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত্রে ঘটনা ঘটেছে। আবহাওয়া ভালো ছিল না। বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই হয়ত বুঝতে পারা যায় নি। তবে গাছ কেটে কেউ নিয়ে পালায় নি। অন্য কোনো উদ্যেশ্যে করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে…যেই বা যারা গাছ কাটুক তা বনদপ্তরের অফিসের ঢিল ছোড়া দূরত্বে হয়েছে। অনেক গুলি গাছ কাটতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। মেশিন হোক বা কুরুল। শব্দ নিশ্চই হয়েছে। তাহলে সরকারি কর্মী রা করল কি ? যদিও সরকারি আধিকারিক থেকে শুরু করে সকলেই জমি কার তাই নিয়ে ব্যস্ত। যে জঙ্গলে গাছ কাটা হয়েছে তা বিট অফিসের ক্যাম্পাস কিনা তাই প্রমানেই ব্যাস্ত। তবে নিয়ম বলে ..গাছ কাটার বিষয়ে ব্যবস্থা নেবার দায়িত্ব বন বিভাগের ই। যে কারোর জমি হোক বা সরকারি। এখন দেখার প্রশাসনের পক্ষ থেকে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

