DURGAPUJA : মেঘলা আকাশ কাশ বনে কে ওই মহিলা ?
একেবারে মা দুর্গা রূপে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ? ইনি কি মহিলা(women ) ? না পুরুষ (man) ? নাকি রূপান্তর কামী ? হাতে ত্রিশূল। কাকে যেন বধ করার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছেন।

আসানসোলের হিরাপুরের ওই রেল ফটক(rail crossing) টা পার হয়ে একটু এগিয়ে গিয়ে বাম হাতে বিশাল বিস্তীর্ন কাশ বন। মেঠো রাস্তার দুই দিক ধরে হওয়ায় মেতেছে কাশ ফুলেরা। আর তার মাঝে কে ওই রমণী ?
কৌতুহল যেন বাঁধ মানে না। এগিয়ে গিয়ে কথা বলতেই ফুটে এল এক প্রতিবাদী কণ্ঠ (activist)। সমাজের কুরুচিকর চিন্তা কে বধ করতে এই ভাবনা। মহিষাসুর রুপি মানুষ গুলোর কুরুচিকর মন্তব্য এর প্রতিবাদ করার লক্ষ্যে এই রূপ। আর রূপান্তর কামী দের সমাজের চোখে যোগ্য সম্মানের দাবীতেই এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

পড়ুন…কে এই সুমন চৌধুরী ?
নাম তার সুমন(suman) চৌধুরী। অভিনেতা(actor)। আসানসোলের হিরাপুর থেকে উঠে আসা এই অভিনেতা দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে কাশ বনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সুমনের প্রতিবাদী কণ্ঠ সেই সব রূপান্তর কামী দের জন্য যারা সমাজে হয়ত যোগ্য সম্মান পান না। যারা এখনো সমাজের বেশ কিছু মহিষাসুর রূপী মানুষের চোখে ব্রাত্য। যার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে সুমন (suman) নিজেই।
অভিনেতা সুমনের লড়াই দীর্ঘ আট বছরের। প্রথম অবস্থায় অনেক বাধা বিপত্তি অতিক্রম করতে হয়েছে বলে জানায় সুমন।
অভিনয় সূত্রে সুমন এক রূপান্তরকামী পাঠ পায়। রূপান্তরকামী সেজে ফটো পোস্ট করে সোশ্যাল সাইটে। ব্যাস আর দেখে কে ?
পড়ুন…কি ভাবে কটাক্ষ উন্নতির পথ প্রশস্ত করে
একের পর এক কুরুচিকর কমেন্ট(comments) আসতে থাকে। সুমনের কথায়…অচেনার থেকে চেনা লোকের কুরুচিকর কমেন্ট বেশি ছিল। সেখান থেকেই তার লড়াই শুরু।
সুমনের মনে প্রশ্ন আসে…রূপান্তরকামী সেজে যদি এত কুরুচিকর মন্ত্যব এর শিকার হতে হয় তাহলে যারা সত্যি রূপান্তরকামী তাদের কত টা সহ্য করতে হয় ?
সুমনের মতে…এই কটাক্ষ আর এই কুরুচিকর কমেন্ট তাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। সাহস জুগিয়েছে নিঃশব্দ বিপ্লব কে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
এই সাজ সেজে হাতে ত্রিশূল নিয়ে সমাজের কিছু ক্ষেত্রের এই ভাবনা বা রুচিবোধ কে বধ করতে নেমেছে সে।
পুরুষ মহিলা রূপান্তরকামী সবাই মায়ের অংশ। রূপান্তরকামী রাও মা দুর্গার অংশ প্রমান করতেই তার এই সাজ।
শুনুন…অভিনেতা সুমনের ভাবনা কি ?
সুমনের ভাবনায়…এমন একটা সমাজ হোক যেখানে থাকবে না কোনো ভেদাভেদ। যেখানে পুরুষ নারী রূপান্তরকামী সবাই সমান সম্মান পায়।
যেখানে পুজো বা উৎসব …সবাই মিলেই হয়। কারণ এ সমাজ সবার। এ সমাজ মানব সমাজ। তৈরি হোক এক বিভেদমুক্ত সমাজ।

