STRUGGLE …বন্দনা যেন বলে ” আমি নারী আমি সব পারি ‘” আর ঘর্মাক্ত পিঠ আর ভেজা চোখগুলো জানতে চায় ‘” আর কবে আর কবে আর কবে ?”

এ ছবি যেন রানার কে মনে পরিয়ে দেয়। ইনি মহিলা । বন্দনা চক্রবর্তী।
পিঠ যেন কালো হয়ে গেছে। ঘাম ঝরছে গলগল করে। একেবারে ছিপছিপে শরীর। রোগা রোগা পায়ের ভরে আসানসোলের রাজপথে তীব্র গরমে ঠেলে নিয়ে চলেছেন আইসক্রিম এর বাক্স।

বাক্সের সঙ্গে থাকা ঘন্টা বাজতেই মানুষ বুঝে যায় আইসক্রিম ওয়ালী এসে গেছে। বাক্সের এক কোনে রয়েছে টিফিন বাক্স। সেখানে দুটি ভাত। কারন হোটেলে খাওয়ার মত যায় হয় না।
পড়ুন…প্রখর রোদে বন্দনা কে বেরোতে হয় কেন ?
প্রখর তাপ প্রবাহে মানুষ যখন বাড়িতে ঢুকে যায় তখন রৌদ্র আটকাতে মাথায় একটি টুপি পরে আইসক্রিম এর ঠেলা নিয়ে বেরোয় বন্দনা। সব দিয়ে থুয়ে দিন প্রতি 250 টাকা মত আয় হয়। তাতে আবার বাড়ির ভাড়া মাসে 1600 টাকা।
আসানসোলের হিরাপুরের সাতা এলাকার বাসিন্দা পায়ে হেটে চলেন প্রায় 10 কিলোমিটার। খুব একটা দামি আইসক্রিম এর ভান্ডার নেই তার কাছে। 10 টাকা বা 20 টাকার আইসক্রিম এর বিক্রি ই বেশি তার কাছে।
বন্দনার কথায়…এ ছাড়া উপায় কি। স্বামী মারা গেছেন 15 বছর আগে। 20 বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে তার। বাড়ি ভাড়া থেকে শুরু করে সব খরচ ই রয়েছে। তার জোগাড় করতে হয়। এর সাথে রয়েছে ঘরের কাজ, পুজো আবার জল ভরা। আর কতদিন ! আর কতদিন পারবেন তিনি জানেন না। কিন্তু এর শরীর চলে না। কোনো সাহায্য ই কোথাও পাওয়া যায় না। বাড়ি ও পাওয়া যায় নি কর্পোরেশনে গিয়েও। লক্ষী ভান্ডার আর স্বাস্থ্যসাথী আছে। তবে এর একটু বড় হলেই মেয়ের বিয়ে দিতে হবে।
দেখুন …কি চায় বন্দনা👇
চাওয়া পাওয়া প্রায় শেষ। মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা হলেই হবে। আর বাকি জীবনটা এ ভাবেই কেটে যাবে।
তবে বন্দনার কষ্ট করার ক্ষমতা যেন বলে দেয় ” নারী আমি সব পারি ”
বন্দনার এই পরিশ্রম যেন দাগ কেটেছে মানুষের মনে। কেউ রাস্তায় দেখলেই আইসক্রিম কেনে কেউ বা জিজ্ঞেস করে ” ভালো আছো বন্দনা ? ”

আর এটাই বন্দনার মনের জোর বাড়াতে সাহায্য করে।
তবে বন্দনার সঙ্গে আইসক্রিম এর বাক্স ঠেলে পায়ে হাঁটলে মনে হয় ” এই বৃদ্ধা পারবে কি এই বোঝা টানতে ? ” আর কবে ? আর কবে ?আর কবে ?

